পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি :
বয়সের কাঁটা ৬৫ ছুঁয়েছে অনেক আগেই। কৃষিকাজ আর সংসারের ব্যস্ততায় নিজের শরীরের খোঁজ নেওয়ার সময় হয়নি কখনো। অবশেষে নিজেকে নিয়ে সচেতন হওয়ার তাগিদেই প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হাসপাতালে এসেছেন পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন আজিজুল হক।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে পীরগঞ্জ ডায়াবেটিস অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায় তাঁকে। পীরগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে সেখানে আয়োজন করা হয়েছে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা ক্যাম্প।
সকালের পর থেকেই হাসপাতাল চত্বর হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। বিভিন্ন এলাকার বয়স্ক নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারি নজর কাড়ে। সবার উদ্দেশ্য একটাই—বিনামূল্যে রক্তের শর্করা পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ।
আজিজুল হক বলেন, “বয়স তো আর কম না। কিন্তু কোনোদিন ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাইনি। শুনলাম এখানে বিনে পয়সায় পরীক্ষা হচ্ছে, তাই আসলাম। শরীরটা কেমন আছে জানা তো দরকার।”
গ্রামাঞ্চলে এখনো স্বাস্থ্য সচেতনতার ঘাটতি ও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে অনেকেই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন না। এ বাস্তবতায় পীরগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির এই আয়োজন তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ সেবা নেন।
আয়োজকরা জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। জীবনে প্রথমবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসা আজিজুল হকদের উপস্থিতিই উদ্যোগটির সফলতা প্রমাণ করে।
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বিনামূল্যের এই ডায়াবেটিস পরীক্ষা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি ও পীরগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির সহসভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বাবুল, পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নসরতে খোদা রানা, ডায়াবেটিক সমিতির আজীবন সদস্য ইলিয়াস আলী, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস হায়াত মিলনসহ ডায়াবেটিক হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।