মোঃ হাইউল উদ্দিন খান, গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের মহানগর এলাকার শিমুলতলীতে আয়োজিত কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা ক্রমেই জমে উঠেছে। শেষ সময়ে এসে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় জমজমাট উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে পুরো মেলা প্রাঙ্গণে। দেশীয় কুটির পণ্য, হাতের তৈরি আসবাব, গ্রামীণ নারীদের পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও শিশুদের খেলনা—সব মিলিয়ে মেলা এখন একটি প্রাণবন্ত মিলনস্থল।
মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন বলেন, “স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বাজার সম্প্রসারণ ও বিকাশে সহায়তাই আমাদের মূল লক্ষ্য। দর্শনার্থীদের সাড়া প্রত্যাশার চেয়েও বেশি, বিক্রিও খুব ভালো হচ্ছে।”
মেলা পরিচালনা কমিটির পরিচালক ওসমান গণি জানান, ১০০টির বেশি স্থানীয় উদ্যোক্তা এখানে অংশ নিয়েছেন। তাদের অনেকেই গ্রামীণ নারীদের তৈরি নকশিকাঁথা, বেতের সামগ্রী, মাটির পণ্য ও জৈব খাদ্যদ্রব্য উপস্থাপন করছেন, যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে ক্রেতাদের কাছে।
দর্শনার্থী ও স্থানীয় স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই মেলার মাধ্যমে দেশীয় ঐতিহ্য নতুনভাবে জানতে পারছি। পণ্যের দামও তুলনামূলক কম এবং মানসম্মত।”
গৃহিণী সাবিহা আক্তার জানান, “এখানে ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক কিছুই পাওয়া যাচ্ছে কম দামে। বিশেষ ছাড়ে কেনাকাটার সুযোগে সবাই সন্তুষ্ট।”
প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা লোকগান, নাচ, নাটকসহ নানা পরিবেশনা তুলে ধরছেন। শিশুদের জন্য রয়েছে রাইড, ট্রেন, বাউন্সি এবং ফুড কর্নার। সন্ধ্যার পর আলোকসজ্জায় মেলার পরিবেশ হয়ে ওঠে আরও মনোমুগ্ধকর।
মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরো কয়েকদিন এই মেলা চলবে। শেষ দিনে থাকবে বিশেষ র্যাফেল ড্র, ক্রেতা উপহার এবং সেরা উদ্যোক্তা সম্মাননা প্রদান।
গাজীপুর সিটি প্রশাসন ও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ফাউন্ডেশন (বিসিক) জানিয়েছে, এ ধরনের মেলা স্থানীয় অর্থনীতিকে সচল রাখে, কর্মসংস্থান তৈরি করে এবং নতুন উদ্যোক্তাদের আত্মপ্রত্যয়ী করতে সহায়তা করে।
শিমুলতলীর এই কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা এখন আর কেবল কেনাকাটার স্থান নয়; বরং স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ব্যবসায়বিকাশ এবং পরিবার–বান্ধব বিনোদনের এক উৎসবমুখর আসর।