মাজহারুল ইসলাম বাদল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ছালেহিয়া এলাকায় থাকা ঘনিমহেষপুর মৌজার নাডোবা কবরস্থানের নামে জমি দখলের চেষ্টা ও একটি ‘ভূয়া কবরস্থান সংরক্ষণ কমিটি’ কর্তৃক আয়োজিত পথসভা নিয়ে উদ্বেগ ও প্রতিবাদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন করেন মধ্য মহেষপুর মরহুম মফিজ উদ্দিন সরকার ঘনিমহেষপুর গোরস্থান সংরক্ষণ কমিটি, রুহিয়া ব্যানারের পক্ষ থেকে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে রুহিয়া থানা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা মহিরুল ইসলাম। বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন যে, ২০ অক্টোবর বিকেলে উত্তরা বাজারে ‘ভূয়া গোরস্থান রক্ষা কমিটি’ নামধারী একটি মহল তাদের জমি নিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রদান করে তাদের মান সম্মানহানি করেছে এবং অকথ্য গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে।
মাওলানা মহিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘনিমহেষপুর মৌজার ঐতিহ্যবাহী জমিদার পরিবারের মরহুম মফিজ উদ্দিন সরকারের একক মালিকানাধীন উক্ত খতিয়ানি জমি (সি.এস খতিয়ান ৫১৭ ও এস.এ খতিয়ান ৫৪১) মোট ৫.৩০ শতক। তিনি জানান, ব্রিটিশ ও পরবর্তীতে এস.এ রেকর্ডে কবরস্থান হিসেবে যেসব আংশিক তালিকা ছিল, সেগুলো ইতিহাসগতভাবে ভুল বোঝাবুঝি থেকে লিপিবদ্ধ হয়েছে; বাস্তবে উক্ত জমির বড় অংশ বহু বছর ধরে পরিবারের নাতি-নিজস্বরা চাষাবাদ করে আসছেন।
বক্তৃতায় মহিরুল আরও বলেন, কয়েকজন আগারচাষী ও আধিয়ার চাষী অতীতে ওই জমিতে মৃতদের দাফন করেছিল; কিন্তু জমির প্রকৃত মালিক কখনোই দাফনে বাধা দেননি। ১৯৯০ সাল থেকে জমি বিক্রয়-ক্রয় শুরু হলে পরবর্তী সময়ে তিনি ও তাঁর জৈষ্ঠ ভ্রাতাও ওই জমি ক্রয় করেন—মোঃ মহিউল ইসলাম ৪৬ শতক ও আলহাজ্ব মাওঃ মোঃ মুজহারুল ইসলাম ২২ শতক—যার প্রমাণ হিসেবে প্রায় ১৩টি খোস কাওলা দলিল রয়েছে এবং ২০০৬ সালে মাঠ পর্চাসহ ডিবি খতিয়ান হয়েছে। তাদের রোপিত আম, লিচু ও ইউকিলিপ্টাস গাছগুলোর বয়স বর্তমানে প্রায় ২৫–৩০ বছর।
মাওলানার দাবি, উক্ত স্বরযন্ত্রশিল্পীরা নিজেদের উদ্যোগে কবর ভেঙে ফেলে এবং তাদের বিরুদ্ধে কবর ভাঙ্গার মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তিনি বলেন, এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি ৩০ জনকে আসামি করে কোর্টে মামলা করেছেন (মামলা নম্বর সি আর ১১৮, তারিখ ০৭/১০/২০২৫)। এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, উক্ত ব্যক্তিরা তাদের রোপিত ইউকিলিপ্টাস গাছ কেটে নিয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে রুহিয়া ছালেহিয়া দারুসুন্নাত ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মুজহারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে তারা জেলা, উপজেলা ও থানা প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিধিসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পাঠ করা লিখিত বক্তব্যে তারা প্রশাসনের কাছে কুচক্রী মহলদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, তাঁদের সম্মান পুনরুদ্ধার ও জমি-দখল রোধ করার অনুরোধ জানায়।