বিয়ে-উৎসবের প্রস্তুতি শেষ, বাজার-সদায় হাতেগোনা দিন, ডেকোরেশনও ঠিকঠাক। আনন্দ আর উত্তেজনায় মাতোয়ারা পুরো পরিবার। কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে বাজলো না বিয়ের সানাই—বাজলো বিরহের সুর।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভরনিয়া গ্রামে এমন বেদনাবিধুর ঘটনা ঘটেছে। মেয়ের বিয়ের ঠিক দুদিন আগে বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দিশেহারা হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। এলাকার লোকজনও বলছেন, খলিলুর রহমান কোনও অপরাধ করেননি, তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের জানা অনুযায়ী, খলিলুর রহমান এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, ছেলে বিদেশে। ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য তিন শতাধিক অতিথি ডেকে, খাদ্য ও সাজসজ্জার সব আয়োজন সম্পূর্ণ করেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। পরে জানা যায়, বিস্ফোরণ মামলায় তাকে আটক দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে খলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা বিয়ে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে মনটা যেন ভেঙে গেছে। কনের মুখেও আনন্দ নেই। অভিভাবকবিহীন বিয়ের আয়োজন যেন শুধু শোকের ছায়া বহন করছে।
খলিলের স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, “আমার স্বামী কোনও রাজনীতি করতেন না। তিনি শুধু একজন কৃষক। জায়গা-জমির বিরোধের কারণে স্থানীয় কিছু বদমাইস লোক তার স্বামীকে পুলিশ দিয়ে ধরে বিয়ের আনন্দ নষ্ট করেছে। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ, তাকে দ্রুত জামিন দেওয়া হোক।”
প্রতিবেশী বেলাল বলেন, “খলিল কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে আটক করা হয়েছে। মেয়ের বিয়ের আগে এমন গ্রেফতারে পুলিশ অমানবিক আচরণ করেছে।”
রাণীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই খলিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুরো গ্রামেই শোক ও হতাশার ছায়া। আনন্দের এই সময়টা পরিবারে